কম্পিউটার কীবোর্ড কি?
কম্পিউটার কীবোর্ড হলো একটি ইনপুট (Input) ডিভাইস । এটির মধ্যে সমস্ত alphabet, numeric, বিভিন্ন রকমের চিহ্ন, Special ক্যারেক্টার , বিভিন্ন রকমের Symbol থাকে, ওই গুলি ব্যবহার করে কম্পিউটার/ ল্যাপটপে ইনপুট দেওয়া সম্ভব।
অর্থাৎ, কম্পিউটারে আমরা যাকিছু করি এর জন্য ইনপুট দেওয়ার প্রয়োজন হয় এবং কীবোর্ড হলো একটি গুরুত্পূর্ণ ইনপুট ডিভাইস (Input Device)।
কীবোর্ড সাধারণত কম্পিউটার এবং ল্যাপটপে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
কম্পিউটার কীবোর্ডের প্রকার:-
কীবোর্ডের কোন টেকনোলজি তে বানানো হয়েছে এই অনুযায়ী ৩ ধরনের কীবোর্ড পাওয়া যায় । যা হলো :-
- মেমব্রেন কীবোর্ড
- মেকানিকাল কীবোর্ড
- লেজার কীবোর্ড
১. মেমব্রেন কীবোর্ড
এই ধরনের কীবোর্ডে সুইচগুলির নিচে একটি পাতলা প্লাস্টিকের sheet থাকে। ওই প্লাস্টিকের sheet এর নিচে ইলেকট্রনিক্স সার্কিট থাকে।
যখন ওই সুইচ গুলিকে press করা হয় , সুইচের নিচে থাকা ইলেকট্রনিক্স সার্কিটে touch হয়, এভাবেই কম্পিউটারকে ইনপুট দেওয়া হয় মেমব্রেন কীবোর্ডের সাহায্যে।
সুবিধা:
- এইগুলি সস্তা হয়।
অসুবিধা
- বেশি প্রেসার দিতে হয়, কীবোর্ডের সুইচ টেপার জন্য
- বেশি দিন টেকে না।
Note:সাধারণত মেমব্রেন কীবোর্ড সমস্ত জায়গাতেই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আমাদের স্কুল, কলেজ, অফিস প্রায় সমস্ত জায়গাতেই। এর কারণ হলো এগুলি খুব সস্তা
Note: বিভিন্ন রকমের ফোল্ড করা কীবোর্ড , মাল্টিমিডিয়া কীবোর্ড ইত্যাদি রকমের কীবোর্ড, মেমব্রেন পদ্ধতিতেই কাজ করে।
২. মেকানিকাল কীবোর্ড
মেকানিকাল কীবোর্ডের প্রতিটি সুইচের নিচে আলাদা আলাদা মেকানিকাল সুইচ (switch) থাকে।
ওই মেকানিকাল সুইচগুলি সম্পূর্ণভাবে মেকানিকাল অংশ (parts) দারা বানানো থাকে।
যার ফলে key টিপলে সঠিকভাবে বোঝা যায়।
সুবিধা
- এটি ব্যবহার করে সুন্দর টাইপিং অনুভূতি পাওয়া যায়।
- সুইচ টাইপ করার সঙ্গে সঙ্গে কম্পিউটারে রেসপন্স (reasponce) পাওয়া যায়।
- শক্ত সুইচ অথবা নরম সুইচ বিভিন্ন প্রকারের পাওয়া যায়। নিজের পছন্দ মত কিনতে পারবেন।
- মেমব্রেন কীবোর্ডের তুলনায় অনেক বেশি দিন টিকে।
অসুবিধা
- এগুলির দাম বেশি হয় মেমব্রেন কীবোর্ডের তুলনায়।
- কীবোর্ডে টাইপ করার সময় অনেক বেশি শব্দ হয় মেমব্রেন কীবোর্ডের তুলনায়।
Note : মেমব্রেন কীবোর্ডের দাম সস্তা তাই বেশি ব্যবহার করা হয়। কিন্তূ মেকানিকাল কীবোর্ড মেমব্রেন কীবোর্ডের তুলনায় অনেক ভালো। যারা কম্পিউটার/ল্যাপটপে গেম (game) খেলে ওনাদের জন্য মেকানিকাল কীবোর্ড খুবই প্রয়োজন, কারণ মেকানিকাল কীবোর্ডে সুইচ টিপলে খুবই তারাতারি কম্পিউটারে রেসপন্স দেয়। যার ফলে গেম খেলার জন্য মেকানিকাল কীবোর্ড অবশ্যই দরকার হয়।
Note: গেমিং (Gaming) কীবোর্ড গুলি এই পদ্ধতিতেই বানানো হয়। গেমিং কীবোর্ড গুলির মধ্যে key গুলির ওপর game এর কোন key ব্যবহার করলে কি হবে এরকম চিহ্ন থাকতে পারে , এটাই শুধু অতিরিক্ত গেমিং কিবোর্ডের মধ্যে।
৩. লেজার কীবোর্ড
এই ধরনের কীবোর্ড লেজারের মাধ্যমে কাজ করে।
অর্থাৎ কীবোর্ড ডিভাইসটি on করলে, একটি লেজার লাইট এসে পড়বে।ওই লেজার লাইটি যেখানে পড়বে ওইখানে কীবোর্ডের key গুলির ছবি দেখতে পাবেন। ওই ছবির ওপরে touch করে টাইপ করতে পারবেন।
সুবিধা
- পোর্টেবল (portable) তাই এখানে ওখানে সহজেই নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
অসুবিধা
- টাইপ করার অভিজ্ঞতা খুব একটা ভালো নয়।
- অসমতল জায়গাতে টাইপ করা সম্ভব নয়।
Note: লেজার কীবোর্ড খুব একটা ভালো নয় কারণ হলো টাইপিং অভিজ্ঞতা ভালো নয়।
কীবোর্ড কেনার আগে কি কি দেখা উচিত?
কীবোর্ড কেনার আগে যা দেখা উচিত , তা হলো :-
- মেমব্রেন/মেকানিকাল
- USB জ্যাক/ওয়্যারলেস(Wireless)
- কিবোর্ডের সংঙ্গে touchpad
- মাল্টিমিডিয়া key
১. মেমব্রেন/মেকানিকাল
সাধারণ কাজের জন্য: মেকানিকাল অথবা মেমব্রেন কীবোর্ড কিনতে পারেন। মেমব্রেন কীবোর্ড সস্তা এবং যদি বেশি টাইপিং করেন তাহলে মেকানিকাল কীবোর্ড ব্যবহার করলেই ভালো।
গেম খেলার জন্য: গেম খেলার জন্য মেকানিকাল কীবোর্ড ব্যবহার করলেই ভালোভাবে গেম খেলা সম্ভব। মেকানিক্যাল কিবোর্ডের key গুলির ওপর গেম এর logo লাগিয়েই গেমিং কীবোর্ড নামে বিক্রি হয়। তাই মেকানিক্যাল কীবোর্ড ব্যবহার করলেই গেম খেলা যাবে।
মেমব্রেন কীবোর্ড ব্যবহার করে গেম খেললে রেস্পন্স টাইম (Response time) খুবই ধীরে ধীরে হয়। যার ফলে ভালোভাবে গেম খেলা যায়না।
রেস্পন্স টাইমের অর্থ হলো , ধরুন কোনো গাড়ি রেসিং গেম খেলছেন , এবং আপনি সঠিক সময়েই কীবোর্ড press করলেন কিন্তু কিবোর্ডের সুইচটি যে টিপেছেন ওই ইনপুট কম্পিউটারের কাছে দেরিতে পৌঁছলে গেম খেললে সমস্যার সৃষ্টি হবে। তাই মেমব্রেন কিবোর্ড দিয়ে ভালো গেম খেলা যায়না। অন্য কোনো কাজ যেমন টাইপ করার সময় late হলেও খুব একটা সমস্যা হয়না কিন্তু গেম খেলাতে এরকম late হলে খেলা সম্ভব নয়।
২. USB জ্যাক/ওয়্যারলেস(Wireless)
কিবোর্ডকে কিভাবে কম্পিউটার/ল্যাপটপে কানেক্ট (connect) করবেন ? কানেক্ট করার জন্য USB jack ব্যবহার করতে পারবেন অথবা ওয়্যারলেস কীবোর্ড কিনবেন এটি ভেবে নেওয়া উচিত।
USB জ্যাক:
USB jack যুক্ত কিবোর্ড কিনতে পারেন, এটি ব্যবহার করতে গেলে কিবোর্ডের মধ্যে থাকা jack টিকে কম্পিউটার/ল্যাপটপে insert করতে হবে।
USB jack এর সুবিধা :
- দামে সস্তা।
- সহজেই কম্পিউটার/ল্যাপটপের সংঙ্গে যুক্ত করা যায়।
USB jack এর অসুবিধা :
- তারের মাধ্যমে যুক্ত থাকে , তাই তার টানাটানিতে তার নষ্ট হতেও পারে।
ওয়্যারলেস:
ওয়্যারলেস কীবোর্ডকে ব্লুএটুথ অথবা Wi-Fi এর মাধ্যমে কানেক্ট করা যায় কম্পিউটার /ল্যাপটপের সংঙ্গে। ওয়্যারলেস কিবোর্ডের সংঙ্গে একটি WIFI adapter কোম্পানি দিয়ে থাকে। যা ব্যবহার করে কম্পিউটারের সংঙ্গে কিবোর্ডকে কোনো তার (wire) ছাড়াই যুক্ত করতে পারবেন।
ওয়্যারলেস কিবোর্ডের সুবিধা হলো
- এটি কোনো তারের দ্বারা যুক্ত করা হয়না।
- দূরে বসেও টাইপ করা সম্ভব।
ওয়্যারলেস কিবোর্ডের অসুবিধা হলো
- এটির দাম বেশি USB jack কিবোর্ডের তুলনায়।
- ব্যাটারির মাধ্যমে কিবোর্ডে পাওয়ার সাপ্লাই (power supply) দেওয়া হয়। তাই ব্যাটারির চার্জ শেষ হয়ে গেলে কীবোর্ড কাজ করবে না।
ওয়্যারলেস কীবোর্ড দামি হয় এছাড়া WIFI adapter হারিয়ে গেলে কীবোর্ড চলবে না , এবং ব্যাটারির চার্জ শেষ হলেও টাইপ করা সম্ভব নয়। তাই USB jack যুক্ত কীবোর্ড ভালো।
৩. Touchpad
অনেক কিবোর্ডের সংঙ্গে টাচ প্যাড (touchpad) থাকে। ওই touchpad টি mouse এর পরিবর্তে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু সমস্যা হলো যেসব কিবোর্ডের মধ্যে টাচ প্যাড থাকে ওই সব কিবোর্ডে নাম্বারের key গুলি থাকে না (যদিও নাম্বারের key গুলি অন্য জায়গায় দেওয়া থাকে ওই কিবোর্ডের মধ্যেই )
তাই কীবোর্ড কেনার আগে ভেবে নেওয়া উচিত আপনার touchpad লাগবে নাকি আলাদা করে মাউস ব্যবহার করবেন।
৪. মাল্টিমিডিয়া Key
মাল্টিমিডিয়া সুইচের সাহায্যে সহজেই গান বাজানো , বন্ধ করা ,ভিডিওর সাউন্ড বাড়ানো কমানো এরকম অনেক কাজ করা যায়। ওই শর্টকাট key গুলির সাহায্যে।
তাই কীবোর্ড কেনার আগে ভেবে নেওয়া উচিত ওই key গুলি আপনার প্রয়োজন কিনা।