কম্পিউটার বুটিং কি? Computer Booting কয় প্রকারের হয়?

বুটিং কি?

বুটিং এর সংজ্ঞা হলো: কম্পিউটার চালু হওয়ার সময়, কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম, সেকেন্ডারি মেমোরি (hard disk, SSD) থেকে প্রাইমারি মেমোরিতেে (RAM) লোড হওয়াকে বুটিং বলে।

অর্থাৎ অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক অথবা SSD এর মধ্যে সঞ্চিত থাকে। ওই অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার যখন হার্ডডিস্ক অথবা SSD থেকে কম্পিউটারের প্রাইমারি মেমোরি (RAM) এর মধ্যে লোড হয় । একেই বুটিং বলা হয়।

যখন আমরা কম্পিউটার বন্ধ করে দিই তখন কম্পিউটারের প্রাইমারী মেমরি তে থাকা অপারেটিং সিস্টেম মুছে যায় ।

অপারেটিং সিস্টেম এবং অনন্য সফটওয়্যারকে চালু করতে গেলে প্রাইমারি মেমোরিতে লোড হতে হয়। অর্থাৎ কোনো অপারেটিং সিস্টেম সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারবে যদি প্রাইমারি মেমোরিতে থাকে। সেকেন্ডারি মেমোরিতে অপারেটিং সিস্টেম নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে। কোনো কাজ করতে পারেনা।

সমস্ত সফটওয়্যার অথবা অপারেটিং সিস্টেমকে প্রাইমারি মেমরিতে লোড হতে হয় এরপরই ওই সফটওয়্যার অথবা অপারেটিং সিস্টেম কাজ করতে সক্ষম হয় কারণ প্রাইমারি মেমোরি হলো working memory।

আর অপারেটিং সিস্টেম ছাড়া কম্পিউটার কোনো কাজ করতে সক্ষম নয়। তাই একবার অপারেটিং সিস্টেম প্রাইমারি মেমোরিতে লোড হয়ে যায়। তারপর সমস্ত কাজ অপারেটিং সিস্টেম দ্বারা করা হয়ে থাকে।

সেকেন্ডারি মেমোরি শুধুমাত্র ডেটা, অপারেটিং সিস্টেমকে অথবা অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়ারের সঞ্চিত রাখে কম্পিউটার বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও। কিন্তূ RAM কোনো কিছু সঞ্চিত করে রাখেনা কম্পিউটার বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে।

কম্পিউটার চলতে গেলে অপারেটিং সিস্টেমকে প্রাইমারি মেমোরিতে (RAM) এর মধ্যে লোড হতে হয়। একবার অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারের প্রাইমারি মেমোরিতে লোড হয়ে গেলে এরপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অপারেটিং সিস্টেমের মাধ্যমে হয়।

যদিও কম্পিউটার বুটিংয়ের সময় অপারেটিং সিস্টেম লোড হওয়া ছাড়াও আরো অনেক কিছুই হয়ে থাকে।

বুটিং প্রসেস কিভাবে সম্পন্ন হয়?

  1. আমার প্রথমে কম্পিউটারের সুইচ অন করি । মনিটরে বিদ্যুত পৌছয় এবং সিস্টেম ইউনিটের SMPS ইউনিটে বিদ্যুত পৌছয় ।
  2. SMPS ইউনিট এসি বিদ্যুতকে ডিসি বিদ্যুতে রূপান্তরিত করে । এবং সিস্টেম ইউনিটের মধ্যে সমস্ত ছোটো ছোটো component গুলিকে প্রয়োজনীয় ভোল্টেজ অনুযায়ী বিদ্যুত সরবরাহ করে ।
  3. যখনই সিস্টেম ইউনিটের মধ্যে সমস্ত component এর মধ্যে বিদ্যুত পৌছয় । ঐ component গুলি চালু হয়ে যায় ।
  4. এবং মাদারবোর্ড এর মধ্যে থাকা একটি প্রোগ্রাম থাকে । যা বিদ্যুত সরবরাহের পরিমাণকে স্তর (Level) এবং সামঞ্জস্যকে (compatibility) check করে । যদি বিদ্যুত সরবরাহে কোনো সমস্যা থাকে তাহলে ঐখান থেকে প্রত্যাবর্তন করে দেয়। আর যদি বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে একটি Power Good signal পাঠায় সিপিইউকে।
  5. Power Good সিগন্যাল পাওয়া মাত্রই, প্রসেসর জাম্পার মেমরি থেকে রম (ROM) এর ঠিকানা নেয় এবং ROM এর বায়োস (BIOS) সেটিংসে পৌঁছে যায়। এবং বায়োস সেটিং enable হয়।
  6. BIOS সেটিং enable হওয়ার পরে, ROM সবার প্রথমে POST (power on self test) প্রসেস চালু করে। POST প্রসেস এর মানে হলো : power on হতেই কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত ডিভাইস এবং কনফিগারেশনকে check করে। যেমন মনিটরের VGA cable, এবং কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত ডিভাইস গুলিকে। যদি কোনো জায়গায় সমস্যা থাকে তাহলে ডিসপ্লে ইউনিট (অর্থাৎ মনিটর কে ) শনাক্ত করে এবং ডিসপ্লে ইউনিটের সাহায্যে সমস্যাকে দেখানো হয়।
  7. POST প্রসেস সম্পূর্ণ হওয়ার পরে, ডিসপ্লে ইউনিট এর সাহায্যে সমস্ত কনফিগারেশন দেখানো হয়।
  8. উপরের সমস্ত প্রসেস সম্পূর্ণ হওয়ার পর, BIOS সেটিং প্রথম টার্গেট ড্রাইভকে খুঁজে। অর্থাৎ কোন ড্রাইভে অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে। (যেমন গতানুগতিকভাবে (By default) টার্গেট ড্রাইভ হিসেবে hard disk সেট করা থাকে , এছাড়াও আমরা পেনড্রাইভে অথবা আলাদা কোনো মেমোরিকে টার্গেট ডিভাইস বানাতে পারি। যখন আমরা হার্ড ডিস্ক ফরমেট করি তখন পেনড্রাইভ অথবা সিডি এর মধ্যে অপারেটিং সিস্টেম রেখে, টার্গেট ড্রাইভ হিসেবে পেনড্রাইভ অথবা সিডি কে সেট করতে পারি )
  9. বায়োস টার্গেট ড্রাইভ থেকে অপারেটিং সিস্টেমকে RAM এর লোড করে। অপারেটিং সিস্টেম সম্পূর্ণভাবে RAM এ লোড হয়ে যাওয়ার পরে সমস্ত নিয়ন্ত্রণ (Control) অপারেটিং সিস্টেমের কাছে চলে আসে। এবং সমস্ত কন্ট্রোল অপারেটিং সিস্টেমের দ্বারা হয়।

এই সম্পূর্ণ প্রসেসকে বুটিং বলা হয়।

বুটিং কয় প্রকারের হয়?

বুটিং ২য় প্রকারের হয়ে থাকে। যা হলো:

  1. শীতল বুটিং (cold booting অথবা soft booting)।
  2. উষ্ণ বুটিং (warn booting অথবা hard booting)

১. শীতল বুটিং (cold booting)

যখন কম্পিউটার চালু করি তখন ওই চালু করার সময় যে কম্পিউটারে বুটিং হয়। ওই বুটিংকে শীতল বুটিং বলা হয়।

অর্থাৎ, আমরা যখন বন্ধ কম্পিউটারকে চালু করি তখন যে বুটিং হয় ওই বুটিং কে শীতল বুটিং বলা হয়।

২. উষ্ণ বুটিং (Warn Booting)

যখন আমরা কম্পিউটার ব্যবহার করি এবং কম্পিউটার হ্যাং হয়ে যায়। ওইসময় কম্পিউটারকে রিস্টার্ট (Restart) করার দরকার হয়ে পড়ে। এবং আমরা কম্পিউটারের রিস্টার্ট বাটনে হাত দিয়ে টিপে কম্পিউটারকে পুনরায় চালু করি। এই অথবা কম্পিউটারের বুটিং কে হার্ড বুটিং বলা হয়।

শেয়ার করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *