কিভাবে ই-কমার্সের ব্যবসা শুরু করবেন? ই-কমার্সের ব্যবসা শুরুর ৭ টি নিয়ম

কিভাবে ই কমার্স ব্যবসা চালু করবেন এ বিষয়ে সমস্ত কিছু জানার জন্য প্রবন্ধটি পড়তে থাকুন।

১. বাজার সম্বন্ধে ধারণা সৃষ্টি

যে কোন ব্যবসা শুরু করার আগে আমাদের বাজার সম্বন্ধে জানতে হয়। কোন প্রোডাক্টটি বিক্রি হচ্ছে অথবা কোনটি বিক্রি হচ্ছে না। মানুষের পছন্দ-অপছন্দ সম্বন্ধে আমাদের ধারণা থাকা উচিত।

এই ধারণার উপর ভিত্তি করেই আপনি আপনার ই-কমার্স ব্যবসায় প্রাথমিকভাবে কোন কোন প্রোডাক্ট গুলি রাখবেন তা ধারণা নিতে পারেন।

অর্থাৎ, আপনাকে ভেবে নিতে হবে কোন প্রোডাক্ট গুলিকে রাখবেন আপনার অনলাইনে ওয়েবসাইটে প্রাথমিকভাবে।

এছাড়াও যেসমস্ত বিষয়গুলি সমন্ধে নজর দিতে হবে সেগুলি হলো:

  • গ্রাহক কিভাবে জিনিসপত্র কেনার সময় সমস্যায় পড়েন।
  • গ্রাহকের কাছে বাজারের ব্যাবসায়ীরা কিভাবে পৌঁছে যায়।
  • গ্রাহক অনলাইনের মাধ্যমে প্রোডাক্ট কিনার জন্য কতটা আগ্রহী।
  • অনলাইন গ্রাহকের সংখ্যা কেমন।
  • কত পরিমাণ গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যাবহার করেন।

এই সমস্ত বিষয়গুলি সমন্ধে অধ্যয়ন করা উচিত।

২. কোম্পানির নাম এবং আইনি বিষয়

এরপরে কোম্পানির নাম পছন্দ করতে হবে এবং কম্পানির নামেই ওয়েবসাইটের নাম রাখতে হবে।

এমন কোনো নাম পছন্দ করতে হবে যে নামে অন্য কোনো কোম্পানির ট্রেডমার্ক নেই।

এবং আপনাকে কোম্পানির নামের সঙ্গে ব্যাবসার সামঞ্জস্য থাকলে তাহলে সহজেই গ্রাহক মনে রাখতে পারবে আপনার ওয়েবসাইটের নামটি। যার ফলে গ্রাহক ওয়েবসাইট বার বার ভিজিট করে জিনিসপত্র কিনতে পারে।

ব্যাবসা শুরু করার আছে আইনি বিষয় সমন্ধে জানা দরকার। পরবর্তীকালে আইনের জটিলতায় কোম্পানির কাজে বাধা সৃষ্টি না হওয়াই ভালো।

৩. প্রোডাক্ট ক্রয় করা

পণ্য ক্রয় করার জন্য বিভিন্ন ম্যানুফ্যাকচারিং জায়গায় পৌঁছতে হবে অথবা alibaba এর মতো ওয়েবসাইট থেকে জিনিসপত্র কিনতে পারেন।

অথবা প্রাথমিকভাবে শুরু করার জন্য কাজের বড় দোকান থেকে পাইকারি দামে জিনিস কিনতে পারেন।

৪. গুদামঘর

প্রোডাক্ট বেশিমাত্রায় কিনে গুদাম ঘরে স্টোর করে রাখতে পারেন এবং ওই প্রোডাক্টের ছবি তুলে অনলাইন স্টোরে আপলোড করতে পারেন।

যদি আপনি এরকম কোনো রিস্ক নিতে না চান তাহলে কোনো বড়ো দোকানের থেকে ছবি নিতে পারেন এবং আপনার অনলাইন স্টোরে ওই ছবিগুলি ব্যবহার করতে পারেন।

অথবা আপনি একটা প্রোডাক্ট কিনে ছবি তুলে অনলাইন স্টোরে ছবি আপলোড করতে পারেন। প্রয়োজনমতো অর্ডার এলে জিনিস কিনে ডেলিভারি করতে পারেন।

ধীরে ধীরে ব্যাবসার উন্নতি দেখতে পেলে এবং প্রোডাক্ট এর চাহিদা অনুযায়ী জিনিসপত্র মজুত করে রাখতে পারেন।

৫. অনলাইন স্টোর বানিয়ে ফেলুন

অনলাইনে স্টোর বানানোর জন্য কোম্পানির নামের ডোমেইন এবং হোস্টিং ব্যাবহার করে অনলাইনে স্টোর বানিয়ে ফেলতে পারেন।

এরপরে ওয়েবসাইটের মধ্যে প্রোডাক্টগুলির সুন্দর সুন্দর ছবি এবং প্রোডাক্টের বিবরণ লিখুন।

এবং গুগলের সার্চ ইঞ্জিনের index করান। যার ফলে গুগলে গ্রাহক প্রোডাক্ট সার্চ করলে আপনার ওয়েবসাইটটি খুঁজে পেতে পারে এবং জিনিসপত্র কিনতে পারে।

ওয়েবসাইট বানানোর জন্য কোনো ওয়েব ডেভেলপার কে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে দিয়ে ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারেন অথবা ওয়ার্ডপ্রেসের মত CMS প্ল্যাটফর্ম ব্যাবহার করে ইকমার্স ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন।

এছাড়াও Android এবং IOS application বানাতে পারেন। যার ফলে আপনার অনলাইন app একবার কেউ ইনস্টল করে ফেললে বার বার জিনিসপত্র কেনার সম্ভাবনা থাকতে পারে।

৬. মার্কেটিং

শুধু ওয়েবসাইট বানালেই গ্রাহক পাবেন এই ধারণা একদমই ঠিক নয়।

আপনাকে গ্রাহক পেতে গেলে মার্কেটিং করতে হবে কোম্পানির। এছাড়াও গুগলের সার্চ ইঞ্জিনে index করতে হবে আপনার প্রোডাক্ট গুলিকে। যার ফলে গ্রাহক গুগলে সার্চ করে সহজেই প্রোডাক্টগুলো খুজে পেতে পারে।

এছাড়াও ফেসবুক, গুগল ads এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যাবহার করে মার্কেটিং করতে পারেন।

ফেসবুক এবং গুগলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। যেহেতু অনলাইনের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জিনিসপত্র কেনাকাটা হবে তাই বিজ্ঞাপন অনলাইনের মাধ্যমে করা উচিত।

অফলাইনে প্রচার করলে, যারা ইন্টারনেট ব্যাবহার করেই না ওনারা আপনার বিজ্ঞাপন দেখেও ওয়েবসাইট থেকে জিনিস কিনতে পারবে না।

৭. লজিস্টিক

লজিকস্টিক অর্থাৎ প্রোডাক্ট কে কিভাবে ডেলিভারি করবেন? এই বিষয়ে সম্পূর্ণ হিসেব করে নেওয়া উচিত।

গ্রাহক প্রোডাক্ট অর্ডার করার আগে হিসেব করে নেবেন কিভাবে প্রোডাক্ট ডেলিভারি করবেন। প্রোডাক্ট ডেলিভারি করার জন্য বিভিন্ন লজিস্টিক কোম্পানির সঙ্গে tie-up করতে পারেন যার ফলে কিছুটা সস্তায় ডেলিভারি করা সম্ভব হয়।

অথবা ব্যাবসার শুরুতে বিভিন্ন লজিস্টিক কোম্পানির মাধ্যমে ডেলিভারি করতে পারেন। ধীরে ধীরে ব্যাবসা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে লজিস্টিক কোম্পানির সঙ্গে Tie-up করতে পারেন।

কিছু বিষয় যা আপনাকে মাথায় রাখতে হবে সেগুলি হলো:

  • ডেলিভারির জন্য যে পরিমাণ টাকা লাগবে ওই টাকার পরিমাণ কম হওয়া উচিত। বেশি ডেলিভারি টাকা লাগলে গ্রাহক কিনতেও না পারে।
  • অনলাইনের জিনিসের দাম খুব বেশি হলে গ্রাহক জিনিস কিনবে না।
  • এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ডেলিভারি করা খুবই জরুরি।

আমার শেষ কথা

ই কমার্স ব্যবসা সমদ্ধে আরো কিছু জানার দরকার যেমন :

প্রাথমিকভাবে সমস্ত জিনিসপত্র কিনে নিয়ে এসে গুদামের মধ্যে ভর্তি করে রাখলে সমস্যা হতে পারে যেমন: ওই জিনিস বিক্রি না হলে ক্ষতি হতে পারে। তাই প্রথমে কিছু দোকানের থেকে জিনিসপত্র কিনে delivery করতে পারেন। ধীরে ধীরে প্রোডাক্টের চাহিদা অনুযায়ী জিনিসপত্র স্টোর করতে পারেন।

ওয়েবসাইট বানানোর জন্য ওয়ার্ডপ্রেস অথবা কোডিং এর মাধ্যমে কোনো ডেভেলপার কে Freelancing এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারেন। পরবতীকালে যদি ব্যাবসার উন্নতি হতে থাকে তখন ধীরে ধীরে ওয়েবসাইট কে উন্নত করার জন্য স্থায়ী ওয়েব ডেভেলপার রাখতে পারেন।

আরো জানুন : কিভাবে ই কমার্স ওয়েবসাইট তৈরী করবেন?

ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের জন্য সবথেকে ভালো হোস্টিং

শেয়ার করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *