ফ্রিল্যান্স, ফ্রিল্যান্সার অথবা ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করেন এর মানে কি? এই সব শব্দের মানে হলো কোনো ব্যক্তি স্বনির্ভর ভাবে কাজ করেন। এবং উনি প্রতি কাজের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ পারিশ্রমিক চার্জ করেন। কোনো কোম্পানি কিম্বা ব্যাক্তির কাছে দায়বদ্ধ নয় কাজ করার জন্য।
উদাহরন হিসাবে, ধরুন কোনো ব্যক্তি বললেন যে উনি একজন ফ্রিল্যান্সার গ্রাফিক্স ডিজাইনার, অর্থাৎ উনি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার এবং উনি কোনো কোম্পানিতে চাকরি করেন না। উনি নিজে থেকেই কাজ ধরে সেই কাজ একটাই করে থাকেন কোনো নির্দিষ্ট ব্যাক্তি বা কোম্পানি এর কাজ করেন না। যখন যা কাজ আসে যেখান থেকেই হোক না কেনো যদি deal পছন্দ হয় তাহলে বাকি বা কোম্পানি এর কাজ করেন।
আরো একটি উদাহরণ হল, ধরুন আপনি ঘর বানাবেন এবং আপনি ঘর বানানোর জন্য যে ডিজাইনটা বানাবেন এটি কোন ফ্রিল্যান্সার অর্থাৎ কোন ব্যক্তিকে দিলেন যিনি টাকার বিনিময় আপনার ঘরের ডিজাইন বানিয়ে দেবে। ঘরের ডিজাইন বানানোর জন্য আপনি কোন কোম্পানি কেউ দিতে পারেন অথবা কোন স্বনির্ভর ব্যাক্তি কেউ দিতে পারেন।
যদি আপনি কোন স্বনির্ভর ব্যক্তিকে দিয়ে থাকেন অর্থাৎ আপনি কোন ফ্রিল্যান্সারকে দিয়ে কাজটি করেছেন।
যিনি ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করেন উনাকে ফ্রিল্যান্সার বলা হয়।
ফ্রিল্যান্সাররা কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির কোন কোম্পানির কাছে দায়বদ্ধ নয় যে উনার কাজটি করে দিতেই হবে সেই সঙ্গে ফ্রিল্যান্সাররা মাসিক বেতন পান না। যেকোনো কাজ করার জন্য deal সম্পন্ন হলে তবেই ফ্রিল্যান্সাররা ওই ওই কাজটি করে থাকেন নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকের মূল্যে। ওই পারিশ্রমিক টি deal হওয়ার সময়ই ধার্য করে থাকে। এবং দুপক্ষের (অর্থাৎ ক্রেতা এবং বিক্রেতা) সম্মতি হলেই deal টি সম্পূর্ণ হয়।
ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য কি যোগ্যতার প্রয়োজন?
ফ্রিল্যান্সিং করতে গেলে নির্দিষ্ট কোন যোগ্যতার প্রয়োজন খুব একটা নেই যদি আপনার মধ্যে কোন কাজের দক্ষতা থাকে তাহলে ওই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন।
ধরুন আপনি ভালো ইংরেজি এবং বাংলা জানেন তাহলে আপনি ইংরেজি থেকে বাংলা তে ট্রান্সলেট করার কাজও করতে পারেন এটি আপনার দক্ষতা।
অথবা আপনি কম্পিউটারে ভালো গ্রাফিক্স ডিজাইনিং করতে পারেন তাহলে ওটাই আপনার দক্ষতা এবং ওই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব।
অথবা যদি আপনি ভালো ছবি আঁকতে পারেন, ওটাই একটি দক্ষতা এবং ওই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে স্বনির্ভর ভাবে যদি আপনি কাজ করেন তাহলে এটিই হবে ফ্রিল্যান্সিং।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করবেন কিভাবে অথবা ফ্রিল্যান্সিং থেকে ইনকাম করবেন কিভাবে?
ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে ইনকাম করার জন্য আপনার কাছে কোন কাজের দক্ষতা থাকা চাই। এবং ওই দক্ষতা এর জন্যই কাজ পেতে পারেন।
যদি আপনার কোন দক্ষতা থাকে তাহলে ওই দক্ষতার ভিত্তিতে কাজ পেতে পারেন অথবা আপনি নতুন কোনো কাজ শিখে নিতে পারেন যার মাধ্যমে আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করতে পারেন।
সহজ কথাটি হলো আপনি অন্য কারো কাজ করে দেবেন পারিশ্রমিক মূল্যে। কিন্তু যদি আপনি কোন কাজ না জানেন তাহলে কিভাবে কাজ করবেন তাই কাজ জানাটা খুবই জরুরি তবে আপনি কাজ পেতে সক্ষম এবং আপনার স্বনির্ভর জীবন যখন কে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন।
কোন রকম দক্ষতা ছাড়া ফ্রিল্যান্সিং করা অসম্ভব প্রায়। তাই আপনার উচিত করুণা কোন দক্ষতা অর্জন করা এবং যার দ্বারা আপনি ইনকাম করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য আপনি কাজ কোথা থেকে পাবেন?
ফ্রিল্যান্সিং কাজ পেতে গেলে আপনাকে বিভিন্ন লোকের সঙ্গে যোগাযোগে থাকতে হবে যারা আপনার দক্ষতার সম্বন্ধিত কোন কাজ করেন অথবা ওনাদের কাছে আপনার দক্ষতার সমসাময়িক কাজের উৎস আছে। এভাবে আপনি কাজ পেতে পারেন।
এছাড়াও অনলাইনে আপনি কাজ পেতে পারেন বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে অর্থাৎ ফেসবুক LinkedIn টুইটার ইনস্টাগ্রম এরকম সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকেও আপনি যোগাযোগ করে কাজ পেতে পারেন।
সোশ্যাল মিডিয়াতে বিশেষ করে ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ ও পেজ থাকে ফ্রিল্যান্সিং কাজ দেওয়ার জন্য। ওই সব গ্রুপে ও পেজে যুক্ত থেকে আপনি আজ পেতে পারেন।
এছাড়া টুইটার ইনস্টাগ্রাম অথবা LinkedIn প্লাটফর্মে ও বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাওয়া যায়।
আর সবথেকে ভালো উপায় হল ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার প্রোফাইল বানিয়ে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ খুব সহজেই পাওয়া যায়।
ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট এর মধ্যে fiverr.com, upwork.com, freelancer.com ইত্যাদি ওয়েবসাইট থেকে আপনি খুব সহজেই আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাজ পেতে পারেন।
এছাড়া বিভিন্ন জব ওয়েবসাইট ফ্রিল্যান্সিং কাজের পোস্ট দেওয়া থাকে। যেমন naukri.com এবং glassdoor.com এরকম কিছু এই সাইট থেকে আপনি সহজেই ফ্রিল্যান্সিংয়ের খুঁজে নিতে পারবেন।
Freelancing এ কাজ করে কত টাকা ইনকাম করা যেতে পারে?
ফ্রিল্যান্সিং এ কাজ করে প্রচুর পরিমাণ ইনকাম করা সম্ভব। ফ্রিল্যান্সিং আপনি যেহেতু প্রতি কাজের বিনিময়ে টাকা অর্জন করেন তাই ইনকামের পরিমাণ সাধারণ চাকরি তুলনায় বেশি যদি আপনি পর্যাপ্ত কাজ পেয়ে থাকেন।
ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ
ভবিষ্যতে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজের পরিমাণ বাড়বে এটাই আশা করা যায় কারণ করোনাভাইরাস এর পর থেকে বেশিরভাগ কোম্পানি ঘরে থেকে কাজের অনুমতি দিয়েছে তাদের কর্মচারীদের।
আর এখানেই ফ্রিল্যান্সিংয়ের সুযোগ বেড়েছে কারণ কম্পানি কোন ছোট কাজ করার জন্য বড় টিমের দরকার নেই কিংবা একজনকে চাকরি দিয়ে অনেক খরচের তুলনায় ফ্রিল্যান্সার দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে চাইছে। এবং যখনই কাজকর্ম হবে সেই সময়ে টাকা দিতে হবে। কোন এমপ্লয়ী রেখে মাসিক বেতন দিতে হবে না।
তাই বলা যেতে পারে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ ধীরে ধীরে বাড়বে আরো।
ফ্রিল্যান্সিং এর কিছু ভালো দিক
ফ্রিল্যান্সিং করলে আপনি নিজের মতো যখন খুশি কাজ করতে পারেন আবার নাও হতে পারেন এটা শুধুমাত্র আপনার ইচ্ছের উপর নির্ভর করবে।
প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার দরকার নেই এবং নটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত অফিসে সময় কাটানোর কোন দরকার নেই কাজ থাকলে আপনি সারাদিন কাজ করতে পারেন আর আপনার ইচ্ছে না থাকলে আপনি নাও করতে পারেন।
যেহেতু কাজ অনুযায়ী টাকা পাওয়া যায় তাই বেশি কাজ করে বেশি ইনকাম করা সম্ভব।
আপনি নিজেই নিজের বস হিসেবে অথবা মালিক হিসেবে কাজ করেন তাই কাজের ওপর কোনো চাপ থাকে না।
ফ্রিল্যান্সিং এর কিছু খারাপ দিক
কোন কাজ আপনি যদি নেন তাহলে ঐ কাজটি র সম্পূর্ণ দায়িত্ব আপনার কোনো রকম কোনো ভুল হলে আপনার নাম খারাপ হতে পারে। শুধু তাই নয় ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে এমনটা হতে পারে।
প্রথম প্রথম ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ পাওয়াটা খুব একটা সহজ নয় যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনার নাম এবং কাজ কাজের প্রশংসা ছড়িয়ে পড়ে ততক্ষণ কাজ পাওয়া সহজে যায় না।
ফ্রিল্যান্সিং কাজে কোন ফিক্সড ইনকাম থাকে না তাই কোন মাসে যদি ইনকাম খুব কম হয়ে যায় এসব সমস্যা হতে পারে।