বল (Force) হলো এমন একটি বাহ্যিক প্রভাব, যা প্রয়োগ করে কোনো স্থির বস্তুকে গতিশীল করা হয় অথবা করার চেষ্টা করা হয় এবং গতিশীল বস্তুকে স্থির করা হয় অথবা স্থির করার চেষ্টা করা হয়।
অন্যভাবে বলতে গেলে,
বল (Force) হলো এমন একটি বাহ্যিক প্রভাব, যা স্থির বস্তুর উপর ক্রিয়া করে স্থির বস্তুকে গতিশীল করে বা করতে চায় এবং যা গতিশীল বস্তুর উপর ক্রিয়া করে তার গতির পরিবর্তন করে বা করতে চায়।
উদাহরণ
- ধরুন আপনি হাত দিয়ে ঘরের দেওয়ালকে ঠেলতে শুরু করলেন, অর্থাৎ আপনি বল প্রয়োগ করলেন। কিন্তু দেওয়ালের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হলোনা। অর্থাৎ আপনি দেওয়ালটিকে সরাতে পারলেন না। কিন্তূ আপনি বল প্রয়োগ করেছেন।
- আবার ধরুন, আপনি টেবিলকে ঠেলতে শুরু করলেন এবং টেবিলটির অবস্থানের পরিবরণত হলো। এটিও বল প্রয়োগ এর মাধ্যমেই হলো।
- আবার ধরুন, আপনি একটি ফুটবলকে হাত দিয়ে আটকালেন তাহলেও ওটিও বল প্রয়োগের মাধ্যমেই হয়েছে।
কোনো স্থির বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তন করতে অথবা কোনো গতিশীল বস্তুর গতির পরিবর্তন করতে যা প্রয়োগ করা হয় তাকে বল বলা হয়।
বলের বৈশিষ্ট্য
- বল অন্তত দুটি বস্তুর একটি মিথস্ক্রিয়া কারণে হয়।
- এটি একটি বস্তুর আকৃতি পরিবর্তন করতে পারে।
- এটি একটি বস্তুর গতির অবস্থা পরিবর্তন করতে পারে।
- যদি বস্তুর উপর ক্রিয়াশীল দুটি বল মাত্রায় সমান কিন্তু অভিমুখে বিপরীত হয়, তাহলে দেহের উপর ক্রিয়াশীল নিট বল শূন্য।
- যখন কোন বস্তুর উপর বিপরীত দিকে বল প্রয়োগ করা হয় তখন তাদের ফলাফল বা নেট বল হল এই বিরোধী বলগুলির মধ্যে পার্থক্য এবং এর ফলের দিকটি বৃহত্তর বলের মতই।
- একই দিকে একটি বস্তুর উপর প্রয়োগ করা বল একে অপরের সাথে যোগ করে এবং ফলাফল একই দিকে থাকে।
- এটি একটি ভেক্টর রাশি তাই এর মাত্রা এবং দিকনির্দেশ দিয়ে বলকে নির্দিষ্ট করা উচিত।
- যদি মাত্রা বা দিক বা উভয়ই পরিবর্তিত হয়, তবে বলের প্রভাবও পরিবর্তিত হয়।
বলের একক কি?
- সেন্টিমিটার গ্রাম সেকেন্ড পদ্ধতিতে (CGS Unit) বলের একক ডাইন (Dyn) বা gcm/s2।
- স্ট্যান্ডার্ড ইন্টারন্যাশনাল পদ্ধতিতে (SI Unit) বলের একক নিউটন (N) বা Kgm/s 2 এ উচ্চারিত হয়।
- F.P.S পদ্ধতিতে বলের একক Poundal (পাউন্ডাল)
এক নিউটন হল ১০০০০০ ডাইনের -এর সমতুল্য।
বলের মাত্রা কি?
বলের মাত্রা [MLT-2]
বলের রাশি কি?
একটি বল একটি ভেক্টর রাশি। একটি ভেক্টর রাশি হল একটি রাশি যার মাত্রা এবং দিক উভয়ই রয়েছে।
বলের সূত্র
ভর (m) এবং ত্বরণ (a) এর ভেক্টর গুণফল দ্বারা বলের পরিমান প্রকাশ করা হয় । সমীকরণ বা বলের সূত্র গাণিতিকভাবে এভাবে প্রকাশ করা যেতে পারে:
F = ma এখানে, F এর হলো Force(বল) a এর হলো acceleration(ত্বরণ)
অর্থাৎ, বল হলো ভর এবং ত্বরণের গুণফলের সমান। এছাড়াও m ভরের কোনো বস্তুকে F বল প্রয়োগ করলে a ত্বরণ সৃষ্টি হবে।
ত্বরণ = বেগ/সময় অর্থাৎ , a = v/t
F = ma F= mv/t mv হলো ভরবেগ এবং t হলো সময় তাই, বলকে ভরবেগের পরিবর্তনের হার হিসাবে উচ্চারিত করা যেতে পারে।
বলের প্রয়োজনীয়তা:
একটি বস্তুর গতির দিক পরিবর্তন করতে।
একটি বস্তুর গতির বেগ (গতি) এর মাত্রা পরিবর্তন করতে।
বস্তুর আকৃতি পরিবর্তন করতে।