সংখ্যা পদ্ধতি কি?
মূলত নির্দিষ্ট প্রতীক বা চিহ্ন দ্বারা কোনো সংখ্যা প্রকাশ করার পদ্ধতিকেই সংখ্যাপদ্ধতি বলে।
অর্থাৎ, বিভিন্ন সাংকেতিক চিহ্ন বা মৌলিক চিহ্ন বা অঙ্ক (ডিজিট) ব্যবহার করে সংখ্যা লিখা ও প্রকাশ করার পদ্ধতিকে সংখ্যা পদ্ধতি বলে। এর সাহায্যে সহজেই সংখ্যা গণনা ও প্রকাশ করা যায়। এক কথায়, সংখ্যাকে প্রকাশ করার ও গণনা করার পদ্ধতিকে সংখ্যা পদ্ধতি বলা হয়।
সংখ্যা পদ্ধতির প্রকারভেদ

উপস্থাপন বা প্রকশের পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে সংখ্যা পদ্ধতি ২ প্রকার। যথাঃ
- পজিশনাল বা অবস্থানগত সংখ্যা পদ্ধতি
- নন পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি
1. পজিশনাল বা অবস্থানগত সংখ্যা পদ্ধতি:
যে সকল সংখ্যা গুলোর স্থানীয় মান আছে এবং স্থান পরিবর্তন করলে মান পরিবর্তন হয় তাদেরকে পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে।
যেমন ৯৭৫ দ্বারা শতক পর্যন্ত মান বোঝায় এবং ৫ এর একক স্থানীয় , মান পরিবর্তন করে দশক স্থানে নিলে পুরা সংখ্যার মান পরিবর্তন হয়ে ৯৫৭ হয়ে যায়।
পজিশনাল পদ্ধতিতে একটি সংখ্যা যে প্রতীকগুলো দিয়ে প্রকাশ করা হয় সেই প্রতীকগুলোর সংখ্যার অবস্থানের উপর ভিত্তি করে সংখ্যার মান কম বেশি হতে পারে।
পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি আবার ৪ প্রকার – যথাঃ-
- বাইনারি
- অক্টাল
- ডেসিমেল
- হেক্সাডেসিমেল
বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি
বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে শুধুমাত্র দুটি সংখ্যা ব্যবহার করা হয়: 0 এবং 1। এই পদ্ধতিতে সংখ্যার ভিত্তি 2। 0 এবং 1 সংখ্যাকে বিট (Bit) বলা হয় এবং 8 বিট(Bit) একসাথে একটি বাইট (byte) তৈরি করে।
কম্পিউটারে ডেটা বিট এবং বাইটের পরিপ্রেক্ষিতে সংরক্ষণ করা হয়। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি অন্যান্য সংখ্যা যেমন 2,3,4,5 ব্যবহার করা হয়না। উদাহরণস্বরূপ: 110101 2 , 11010101 2 , 101010101 2 বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে সংখ্যার কিছু উদাহরণ।
বাইনারি সংখ্যার উদাহরণ:
111011 = 1 × 2 5 + 1 × 2 4 + 1 × 2 3 + 0 × 2 2 + 1 × 2 1 + 1 × 2 0
11001.101 = 1 × 2 4 + 1 × 2 3 + 0 × 2 2 + 0 × 2 1 + 1 × 2 0 + 1 × 2 -1 + 0 × 2 -2 + 1 × 2 -3
অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি
অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতিতে আটটি সংখ্যা ব্যবহার করা হয়: 0,1,2,3,4,5,6 এবং 7 যার ভিত্তি 8। অর্থাৎ অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ০ থেকে ৭ পর্যন্ত সংখ্যা ব্যবহার করা হয়। মোট ৮ টি সংখ্যা হয়।
এই সিস্টেমের সুবিধা হল যে এটিতে অন্যান্য অনেক সিস্টেমের তুলনায় কম সংখ্যা রয়েছে, তাই, সেখানে কম কম্পিউটেশনাল ত্রুটি হবে। উদাহরণস্বরূপ: 78 8 , 45 8 , 1451 8 অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতিতে সংখ্যার কিছু উদাহরণ।
অক্টাল সংখ্যার উদাহরণ:
47216 = 4 × 8 4 + 7 × 8 3 + 2 × 8 2 + 1 × 8 1 + 6 × 8 0
673.024 = 6 × 8 2 + 7 × 8 1 + 3 × 8 0 + 0 × 8 -1 + 2 × 8 -2 + 4 × 8 -2
দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি
দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি দশটি সংখ্যা ব্যবহার করে: 0,1,2,3,4,5,6,7,8 এবং 9 যার ভিত্তি সংখ্যা 10। অর্থাৎ অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ০ থেকে ৯ পর্যন্ত সংখ্যা ব্যবহার করা হয়। মোট ১০ টি সংখ্যা হয়।
দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি হল একটি পদ্ধতি যা আমরা সাধারণত সংখ্যাকে বাস্তবে উপস্থাপন করতে ব্যবহার করি। উদাহরণস্বরূপ: 84 10 , 345 10 , 43457 10 দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে সংখ্যার কিছু উদাহরণ।
হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি
হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতিতে ০ থেকে ৯ পর্যন্ত সংখ্যা এবং A থেকে F পর্যন্ত মোট ১৬ টি সংখ্যা এবং বর্ণমালা ব্যবহার করা হয়েছে। 0,1,2,3,4,5,6,7,8,9 এবং A,B,C,D,E,F যার ভিত্তি সংখ্যা 16।
এই সংখ্যা পদ্ধতির মাধ্যমে কম্পিউটারে বাইনারি সিস্টেমের বড় আকারের স্ট্রিংগুলি কমাতে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ: 8C3 16 , 4F 16 , 6D5B 16 হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতিতে সংখ্যার কিছু উদাহরণ।
হেক্সাডেসিমেল সংখ্যার উদাহরণ:
90A5C = 9 × 16 4 + 0 × 16 3 + A × 16 2 + 5 × 16 1 + C × 16 0 = 9 × 16 4 + 0 × 16 3 + 10 × 16 2 + 5 × 16 1 + 12 × 16 0
2. নন-পজিশনাল বা অস্থানিক সংখ্যা পদ্ধতি
যে সংখ্যা পদ্ধতিতে সংখ্যার কোন স্থানীয় মান নেই। এবং অবস্থানের ভিক্তিতে ঐ সংখ্যার মানের কোন পরিবর্তন হয়না তাকে নন-পজিশনাল সংখ্যা বলে।
উদাহরণ হিসাবে,নন-পজিশনাল সংখ্যা যেমন i=5 ধরা হলে, এখানে i হচ্ছে নন পজিশনাল সংখ্যা। অর্থাৎ i এর মান সব জায়গায় একই থাকবে যেখানেই ব্যবহার করা হোক না কেন।
ধরুন x = ৪৫৫ অর্থাৎ আপনি x কে যেখানেই ব্যবহার করুন সমস্ত জায়গায় একই থাকবে।
নন-পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি আবার ৪ প্রকার, যা হলো :
- রোমান সংখ্যাসমূহ
- Excess-3
- CodeCyclicCode
- Gray Code