স্যাটেলাইট ও অপটিক্যাল ফাইবারকে বিভিন্ন আলাদা কাজের জন্য ব্যাবহার করা হলেও বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য স্যাটেলাইট ও অপটিক্যাল ফাইবার এই দুটোই ব্যাবহার করা হয়।
স্যাটেলাইট যোগাযোগ (Satellite Communication):
জিওস্টেশনারি কমিউনিকেশন স্যাটেলাইটগুলি যোগাযোগের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। প্রচুর সংখ্যায় স্যাটেলাইট মহাকাশ থেকে পৃথিবীর যেকোনো জায়গায় ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদান করতে সক্ষম।
পৃথিবীর বিভিন্ন দুর্গম জায়গাতে অপটিক্যাল ফাইবার এর মাধ্যমে ইন্টারনেট এখনো পৌঁছয়নি সেক্ষেত্রে স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে খুবই সহজে ইন্টারনেট প্রদান করা সম্ভব। সোলার প্যানেল প্রধানত বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য স্যাটেলাইটে ব্যবহৃত হয়।
অপটিক্যাল ফাইবার যোগাযোগ (Optical fiber Communication):
অপটিক্যাল ফাইবার কমিউনিকেশন ব্যাপকভাবে পৃথিবীর মধ্যে ছড়িয়ে আছে , অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের মেরুদন্ড বলতে পারেন। পৃথিবীতে বেশিরভাগ ডেটা অপটিক্যাল ফাইবার এর মাধ্যমে আদান প্রদান হয়ে থাকে।
প্রেরকের দিক থেকে প্রাপকের দিক থেকে সংকেত আলোক রশ্মির মাধ্যমে বাহিত হয়। অপটিক্যাল যোগাযোগে বৈদ্যুতিক বা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক হস্তক্ষেপ দ্বারা সংকেতগুলি প্রভাবিত হয় না। ফাইবারে ট্রান্সমিশন লস কম হওয়ায় এটির পরিবর্ধক প্রয়োজন হয় না।
অপটিক্যাল ফাইবার এবং স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনের তুলনা
- গতিশীলতা (speed): অপটিক্যাল ফাইবার মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনে ব্যবহার করা যাবে না এবং নির্দিষ্ট অবস্থানের জন্য উপযুক্ত। স্যাটেলাইট যোগাযোগ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের জন্য উপযুক্ত।
- ব্যান্ডউইথ এবং ডেটা রেট (bandwidth and data rate): অপটিক্যাল ফাইবার স্যাটেলাইটের তুলনায় উচ্চ ব্যান্ডউইথ এবং ডেটা রেট সমর্থন করে।
- নির্ভরযোগ্যতা (reliability): ফাইবার অপটিক্যাল যোগাযোগ স্যাটেলাইটের চেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য।
- কভারেজ (Coverage): স্যাটেলাইটগুলি টিভি এবং রেডিওর মতো বড় কভারেজ সহ পয়েন্ট থেকে মাল্টি-পয়েন্ট পরিষেবা প্রদানের জন্য উপযুক্ত।
- প্রাথমিক খরচ (Initial Cost): অপটিক্যাল ফাইবার কমিউনিকেশনের তুলনায় স্যাটেলাইটের প্রাথমিক খরচ বেশি।
- ভূখণ্ড: ফাইবার অপটিক্যাল শহুরে এলাকা এবং সমতল ভূমির জন্য অধিক উপযোগী যেখানে খনন/বিছানো সহজ। স্যাটেলাইট যোগাযোগ প্রত্যন্ত অঞ্চল এবং পাহাড়ি এলাকার মতো রুক্ষ ভূখণ্ডের জন্য উপযুক্ত।
- বিলম্ব (Delay): অপটিক্যাল ফাইবারে ন্যূনতম বা কোন বিলম্ব নেই যা রিয়েল টাইম অ্যাপ্লিকেশনের জন্য উপযুক্ত। স্যাটেলাইট যোগাযোগের ক্ষেত্রে কিছুটা স্লো।
স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন এবং অপটিক্যাল কমিউনিকেশনের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ:
স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন | অপটিক্যাল কমিউনিকেশন |
---|---|
স্যাটেলাইট যোগাযোগ প্রচারের মাধ্যম হিসেবে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ ব্যবহার করে। | অপটিক্যাল যোগাযোগ প্রচারের মাধ্যম হিসেবে আলোক রশ্মি ব্যবহার করে। |
স্যাটেলাইট থেকে পৃথিবীতে ইন্টারনেট প্রদান করা হয়। | অপটিক্যাল যোগাযোগে, যোগাযোগ অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে ঘটে। |
স্যাটেলাইট যোগাযোগে, সংকেত প্রেরণ এবং গ্রহণের জন্য বিশেষ ধরণের অ্যান্টেনার প্রয়োজন হয়। | অপটিক্যাল যোগাযোগে, যোগাযোগের জন্য কোন বিশেষ অ্যান্টেনার প্রয়োজন হয় না। |
বায়ু স্যাটেলাইট যোগাযোগের মাধ্যম। | অপটিক্যাল যোগাযোগের সময়, ফাইবার হল সংক্রমণের মাধ্যম। |
স্যাটেলাইট যোগাযোগের প্রতিটি ট্রান্সপন্ডার 36 মেগাহার্টজ ব্যান্ডউইথ সমর্থন করে এবং একই সাথে 12টি চ্যানেল ধরে রাখে। | অপটিক্যাল ফাইবার খুব বড় পরিসরের একটি ব্যান্ডউইথ সমর্থন করে এবং একটি কেবল অনেক ফাইবারকে একত্রিত করে। |
স্যাটেলাইট যোগাযোগ সুবিধাজনক এবং খুব দীর্ঘ দূরত্ব যোগাযোগের জন্য কার্যকর। | পয়েন্ট টু পয়েন্ট স্বল্প দূরত্ব যোগাযোগের জন্য, অপটিক্যাল যোগাযোগ উপযুক্ত এবং কার্যকর। |
ইনস্টলেশন খরচ খুব ব্যয়বহুল। | স্যাটেলাইট যোগাযোগের তুলনায় ইনস্টলেশনের খরচ খুবই কম। |
ব্যান্ডউইডথ কম। | ব্যান্ডউইথ বেশি। |
ডেটা রেটস (Date Rates) কম। | ডেটা রেটস বেশি। |
কম নির্ভরযোগ্য | বেশি নির্ভরযোগ্য। |
ডেটা আদান প্রদানের সময় বেশি লাগতে পারে। | ডেটা আদানপ্রদানে delay নেই বললেই চলে। |
খরচ বেশি। | খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক কম। |
পৃথিবীর যেকোনো জায়গাতে সিগন্যাল পাওয়া সম্ভব। | সব জায়গাতে অপটিক্যাল ফাইবার পৌঁছতে পারেনি। |