ড্রপশিপিং কি ? কিভাবে ইনকাম করা যায় , ভালো না খারাপ

ড্রপশিপিং কি _ কিভাবে ইনকাম করা যায় , ভালো না খারাপ

অনেকেই ড্রপশিপিং এর নাম শুনেছেন অথবা অনেকেই শোনেনি । তাই ড্রপশিপিং সমন্ধে সমস্তকিছু নিখুঁতভাবে জানতে , এই আর্টিকেল টি মন দিয়ে পড়ুন শেষ পর্যন্ত।

ড্রপশিপিং কি ?

ড্রপশিপিং হলো একপ্রকারের ব্যাবসা করার পদ্ধতি। ড্রপশিপিং এর মাধ্যমে কোনো পণ্য ( Product) আপনাকে জমা করে রাখতে হবে না। সরাসরি অন্য কোনো জায়গা থেকে কিনে কাস্টমারকে দিতে পারবেন।

উদাহরণ হিসেবে, ধরুন আপনার একটি অনলাইন জিনিসপত্র বিক্রি করার জন্য ওয়েবসাইট আছে। এবং ওই ওয়েবসাইটে অনেক জিনিসপত্রের ছবি ও দাম দেওয়া আছে।

যখনই কেউ কাস্টমার কোনো প্রোডাক্ট অর্ডার করবে , ওই ওয়েবসাইট থেকে।

তখন, আপনি ওই প্রোডাক্টটি আপনার কাছের কোনো দোকান থেকে কিনে , ওই কাস্টমারের ঠিকানা তে পাঠিয়ে দেবেন।

এই ভাবে ব্যাবসা করার পদ্ধতিকেই ড্রপশিপিং (dropshipping) বলা হয়।

আরো জানুন : ঘরে বসে অনলাইন জব করে ইনকাম করবেন কিভাবে?

ড্রপশিপিং এর কিছু পদ্ধতি

প্রচুর মানুষ আছেন যারা ড্রপশিপিং এর মাধ্যমেই জীবনে সফল হয়েছেন।

এবং ড্রপশিপিং এর মূল ধারনা (Idea) হলো , পণ্য কে স্টোর (store) রাখার প্রয়োজন নেই।

যখনই কাস্টমার অর্ডার করবে, তখন প্রোডাক্টটি বাইরে থেকে কিনে কাস্টমার এর কাছে পাঠাতে পারেন। এতে স্টোর করে রাখার খরচ বেচেঁ যায়।

পদ্ধতি ১

ধরুন, আপনি অনলাইন ওয়েবসাইট বানিয়ে বিভিন্ন প্রোডাক্টের ছবি ও দাম লিখে রেখেছেন।

যখন আপনার ওয়েবসাইট থেকে কোনো জিনিস অর্ডার করবেন। তখন আপনি ওই প্রোডাক্টটিকে aliexpress.com ওয়েবসাইটে গিয়ে ওই কাস্টমারের নাম ও ঠিকানা দিয়ে অর্ডার করে দিতে পারেন।

এর ফলে aliexpress.com সরাসরি ওই প্রোডাক্টটি কাস্টমারের বাড়ির ঠিকানা তে কুরিয়ারের মাধ্যমে ডেলিভারি করে দেবে।

এই পদ্ধতির সুবিধা হলো:

  • প্রডাক্ট কে ডেলিভারি করার কোনো ঝঞ্ঝাট থেকে না।
  • aliexpress.com এর মধ্যে যে দামে প্রোডাক্ট টি কিনবেন তার থেকে বেশি দাম আপনার ওয়েবসাইটে দিয়ে রাখবেন। তাহলেই কিন্তূ আপনার লাভ হবে।
  • ঘরে বসে সহজেই টাকা পাওয়া যায়।
  • প্রোডাক্ট কিনে স্টোর করে রাখতে হয় না। এর ফলে কম খরচেই ব্যাবসা করা যায়।
  • স্টোর করার জন্য কোনো ওয়্যারহাউস (warehouse) এর দরকার হয় না।

অসুবিধা গুলি হলো:

  • সরাসরি যেহেতু আলিএক্সপ্রেস এর মত ওয়েবসাইট থেকে প্রোডাক্টটি পাঠানো হচ্ছে। তাই ওই সব অনলাইনে কোম্পানির কাছে আপনার কাস্টমারের ঠিকানা ফোন নম্বর সমস্তকিছু থাকবে। যার ফলে ওই কোম্পানি আপনার কাস্টমার কে সরাসরি কাস্টমার বানাতে পারে।
  • যেহেতু প্রোডাক্টের দামের তুলনায় আপনি বেশি দাম নিচ্ছেন তাই কাস্টমার যদি জানতে পারে, অন্য কোথাও থেকে সরাসরি প্রোডাক্টটি আসছে। তাই ওখান থেকে সরাসরি প্রোডাক্টটি কিনতেও পারে। এতে কাস্টমার ছেড়ে যাবে।

পদ্ধতি ২

ধরুন, আপনি কি একটি অনলাইনে ওয়েবসাইট বানালেন এবং বিভিন্ন প্রোডাক্টের ছবি ও দাম দিয়ে রাখলেন।

যখনই কোনো কাস্টমার আপনার ওয়েবসাইট থেকে কোনো প্রোডাক্ট অর্ডার করবে। তখন ওই প্রোডাক্টটি চেনা জানা দোকানির থেকে কিনে, বাড়িতে নিয়ে এসে প্যাকিং করে ডেলিভারি (Delivery) করতে পারেন।

এভাবেও অনেকেই business করে থাকে।

এই পদ্ধতির সুবিধা গুলি:

  • প্রডাক্ট (Product) স্টোর (store) করে রাখতে হয় না।
  • কাস্টমার এর ঠিকানা ,ফোন নম্বর এগুলি দোকানদার পায় না। তাই আপনার কাস্টমারকে সরাসরি দোকানদার প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারবে না।

এই পদ্ধতির অসুবিধা গুলি:

  • আপনাকে দোকানের জিনিসের দাম সবসময় জানতে হবে। যদি দাম বেড়ে যায় তাহলে ওয়েবসাইটেও দাম বাড়িয়ে দিতে হবে। নাহলে বেশি দামে কিনে করে, কম দামে বিক্রি করলে সেটি লাভজনক হবে না।
  • প্রোডাক্টটি যদি না পাওয়া যায় , তাহলে আপনি কাস্টমারকে ডেলিভারি করতে পারবেন না। যার ফলে কাস্টমারের বিশ্বস্ততা কমে যাবে।
  • কাস্টমার যদি প্রোডাক্ট return করে। তাহলে ওই প্রোডাক্টটি আপনার কাছে থেকে যাবে। যার অর্থ হলো ক্ষতি।

কিভাবে Dropshipping ব্যবসা শুরু করবেন ?

dropshipping ব্যবসা করতে গেলে একটি ইকমার্স ওয়েবসাইট (Ecommerce Website) বানাতে হবে । যার মাধ্যমে অনলাইনে প্রোডাক্ট কে ভিজিটর দেখতে পাবেন। এবং ওই ওয়েবসাইট থেকেই অর্ডার করতে পারবে।

  • জানুন কিভাবে ইকমার্স ওয়েবসাইট বানাবেন।

এছাড়া Shopify.com এর মত ওয়েবসাইট আছে, যেখানে ওয়েবসাইট বানানো আছে । ওখানে সরাসরি প্রোডাক্ট এর ছবি ও দাম দিয়ে নিজস্ব ইকমার্স ওয়েবসাইট বানিয়ে ফেলতে পারেন। ওয়েবসাইট এর বানানোর ঝঞ্ঝাট থেকে মুক্তি পেতে পারেন shopify এর মাধ্যমে।

এরপর আপনার ইকমার্স ওয়েবসাইটের মার্কেটিং করতে হবে। যত বেশি ও ভালো পদ্ধতিতে প্রচার করবেন তত ওয়েবসাইটটিকে বেশি কাস্টমার জানতে পারবেন।

এবং বেশি বিক্রি হবে।

Dropshipping ভালো না খারাপ?

ধরুন, আপনি কাস্টমার বানালেন প্রচার করে কিন্তূ কাস্টমার যদি জানতে পারে ওই প্রোডাক্টটি অন্য জায়গাতেও পাওয়া যায় সস্তাত তখন আর কোনোভাবেই আপনার ওয়েবসাইট থেকে কিনবে না।

অথবা আপনাকে খুবই কম লাভ রাখতে হবে। নাহলে প্রোডাক্টের দাম খুব বেড়ে যাবে।

কারণ এখানে প্রথমে দোকানদার , অথবা aliexpress.com এর মত কোম্পানি লাভ করছে পণ্য টি বিক্রি করে।

তারপর আপনি যখন ওই পণ্যের ওপর লাভ রাখার জন্য দাম বাড়াবেন। তখন দাম টি খুবই বেশি হয়ে যেতে পারে।

অন্যথায়, আপনাকে খুবই কম লাভ রাখতে হবে। যার ফলে পণ্যের দাম যেনো খুব বেশি না হয়।

কিন্তূ , লাভ খুব কম রেখে ব্যাবসা করলে, যদি কোনো কাস্টমার রিটার্ন করে । তাহলে প্রচুর ক্ষতি হবে।

এছাড়াও যেহেতু আপনার কাছে প্রোডাক্ট নেই তাই কোনো কারনে যদি প্রোডাক্ট টি না পাওয়া যায় । এতে কাস্টমার ছেড়ে যাবে।

তাই, ড্রপশিপিংএর business কে Full Time করা উচিত নয়।

প্রথমে, পার্ট টাইম করে যদি সফলতা পান , তাহলেই full time করতে পারেন।

উপসংহার

ড্রপশিপিং করে অনেকেই ইনকাম করে থাকেন কিন্তূ অনেকেই সফল হতে পারে না।

তাই যদি প্রথমে ড্রপশিপিং এর মাধ্যমে ইকমার্স ব্যাবসা শুরু করে। পরে নিজের স্টোর বানাতে পারেন। যার ফলে কাস্টমারকে আরো অনেক সস্তা ও আপনার লাভ বেশি রাখতে পারবেন।

আরো জানুন : ঘরে বসে অনলাইনে টাকা ইনকাম করবেন কিভাবে?

শেয়ার করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *