কনটেন্ট রাইটিং কি? ইনকাম, কিভাবে কাজ, সাবধানতা

কনটেন্ট রাইটিং

আমরা অনলাইনে ইনকাম করার জন্য অনেক খোঁজাখুঁজি করে। চেষ্টা করি, কোন উপায়ে অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করা যায়। আর অনেক উপায়ের মধ্যে কনটেন্ট রাইটিং ও হলো একটি উপায় যার মাধ্যমে অনলাইন থেকে আপনি ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়াও content writing শিখে কোন কোম্পানিতে সহজেই কাজ পেতে পারেন।

কন্টেন্ট রাইটিং এর সবথেকে ভালো ব্যাপার হলো আপনি যদি শারীরিক ভাবে পরিশ্রম করতে না চান তাহলে কনটেন্ট রাইটিং আপনার জন্য খুবই ভাল একটি কাজ। সেই সঙ্গে কনটেন্ট রাইটিং করে আপনি আপনার ভবিষ্যৎ বলতে পারবেন।

কনটেন্ট রাইটিং কি?

কনটেন্ট রাইটিং হল ইন্টারনেটে অবস্থিত লেখা অথবা ঐ লেখাকে সম্পাদন (Edit) করার প্রক্রিয়া। এটি সাধারণত ডিজিটাল কনটেন্টের জন্য লেখা হয়।

যেমন ডিজিটাল মার্কেটিং, ব্লগ পোস্ট, আর্টিকেল ইত্যাদি ইত্যাদি।

সহজ ভাষায় কনটেন্ট রাইটিং বলতে বোঝায় আপনি যে আর্টিকেলটি পড়েছেন এটি একটি কন্টেন্ট। আর আপনি যখন এই কনটেন্ট টি লিখবেন। তাই হল কনটেন্ট রাইটিং

যারা, এগুলি লিখে থাকে তাদের কনটেন্ট রাইটার বলা হয়।

আমরা যেকোন ওয়েবসাইট ভিজিট করলেই দেখতে পাই প্রচুর প্রচুর লেখা থাকে। ওই লেখাগুলি,, কনটেন্ট রাইটার এর দ্বারাই থাকায় তাদের দ্বারাই লেখা হয়ে থাকে।

আমাজন ফ্লিপকার্ট এছাড়া সমস্ত website এ কন্টেন্ট লেখার জন্য কন্টেন্ট রাইটার ব্যাবহার করে থাকে।

এছাড়া নিউজ চ্যানেলের যে website থাকে তা কন্টেন্ট রাইটারের দ্বারাই লেখা হয়। কারণ, নিউজ চ্যানেলে দিনে প্রচুর খবর লেখা হয়। আর সেগুলি একজনের দারা সম্ভব নয়।

এর জন্য নিউজ চ্যানেলে সব থেকে বেশি কন্টেন্ট রাইটার এর প্রয়োজন হয়।

কনটেন্ট রাইটিং এর ব্যবহার কোথায়?

অনেকেই মনে করেন কনটেন্ট রাইটিং শুধুমাত্র ওয়েবসাইট ব্লক পোস্টের মধ্যে লেখা অথবা কোন অনলাইন শপিং ওয়েবসাইটে লেখা হয়। অনেকেই মনে করেন কনটেন্ট রাইটিং শুধুমাত্র ওয়েবসাইটের মধ্যে লেখাকেই content writing বলে কিন্তু তা আসলে ঠিক নয়।

কন্টেন্ট রাইটিং এর দরকার বিভিন্ন জায়গায় হয়ে থাকে যা হলো।

  • ভিডিও এর স্ক্রিপ্ট (অর্থাৎ ভিডিও তে যা বলা হবে সেগুলি লেখা হয়)
  • মার্কেটিং এর জন্য অথবা বিভিন্ন কারণে যে ইমেইল পাঠানো হয় । এখানেও কন্টেন্ট রাইটিং করা হয়।
  • কোনো অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় ও কন্টেন্ট রাইটিং এর দরকার হয়।
  • সোশাল মিডিয়াতে পোস্ট লেখা । ঐগুলিও কন্টেন্ট রাইটিং এর মধ্যে পড়ে।
  • ওয়েবসাইটের মধ্যে লেখা ।
  • স্ক্রিপ্ট রাইটিং

কন্টেন্ট রাইটিং শিখবেন কিভাবে?

Content writing শেখার জন্য বিভিন্ন website থেকে অনলাইনে শিখে নিতে পারেন। ভালোভাবে গুছিয়ে লিখতে না পারলে, কোনো ভিজিটর ওয়েবসাইট ভিজিট করে ওয়েবসাইট থেকে বেরিয়ে যাবে। কারণ, আপনার লেখার মধ্যে অনেক কিছু বুঝতে পারেননি।

এইজন্য কনটেন্ট রাইটিং হলো একটি কলা(art) । যা মানুষের পড়তে আকষিক্ত করবে। এমন সুন্দর হেডলাইন রাখলে তাহলেই কিন্তুু ওই হেডলাইনে ক্লিক করে বাকি কনটেন্টটি পড়বে।

তাই, অভিজ্ঞ কনটেন্ট রাইটারদের লেখা অনেক সুন্দর এবং আকর্ষণীয় হয়। যার জন্য অভিজ্ঞ রাইটারের লেখা পড়তে অনেকেই আকর্ষিত করবে। সেইসঙ্গে লেখাটি পড়ে সহজেই বোঝা সম্ভব।

আমি নিচে, অনলাইনে কনটেন্ট রাইটিং শেখার কোর্সের ফটো দিলাম যদি পছন্দ হয়, তাহলে এখান থেকেই অনলাইনে শিখে নিতে পারেন।

Content writing এ কত ইনকাম

প্রচুর মানুষ আছে যারা কনটেন্ট রাইটিংয়ের কাজ করেন, এবং এর মাধ্যমে আয় করে থাকেন।

অনেকেই প্রশ্ন থাকতে পারে, কত টাকা ইনকাম করা সম্ভব কনটেন্ট রাইটিং করে?

যদি আপনি প্রথমে কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ করেন, তাহলে খুব একটা বেশি টাকা পাবেন না।

এবং ধীরে ধীরে যত আপনার অভিজ্ঞতা বাড়বে সেই সঙ্গে আপনার পরিচিতি বাড়বে। তখন আপনার লেখার দাম ও বাড়বে।

কনটেন্ট রাইটিং করলে আপনি দুভাবে ইনকাম করতে পারবেন

  • একটি হল কোনো কোম্পানিতে কাজ করা
  • অথবা, ফ্রিল্যান্সিং কাজ করা

আপনি যদি নতুন কনটেন্ট রাইটার হন, কোনো কাজ করার অভিজ্ঞতা না থাকে। তাহলে, প্রথমে ৮০০০ থেকে ১০,০০০ টাকার মতো পাওয়া যেতে পারে, কিংবা এর থেকে একটু বেশি।

ধীরে ধীরে আপনার যত অভিজ্ঞতা বাড়বে, আপনার ইনকাম ততই বাড়বে, দুই থেকে তিন বছরের অভিজ্ঞতা রাইটার 30 থেকে 60 হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পেতে পারে।

আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং এ রাইটিং করেন। তাহলে ইনকামের কোন সীমা নেই। অর্থাৎ ফ্রীলান্সিং আপনি যত কাজ করবেন। সেই অনুযায়ী টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

একজন নতুন কনটেন্ট রাইটার যদি ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ইনকাম করতে চায়, তাহলে সহজে বেশি কাজ পাবেনা, সেইসঙ্গে বেশি দামও পাওয়া যায়না, কারণ নতুন এর জন্য।

ধীরে ধীরে যত অভিজ্ঞতা বাড়বে এবং পরিচিত হবেন। কাজ তত বাড়বে, ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ততই বেশি কাজ পাওয়া যায়, সেই সঙ্গে দামও বেশি পাওয়া সম্ভব।

একজন ফ্রিল্যান্সার প্রথমে যখন কাজ করেন, তখন 25 পয়সা প্রতি ওয়ার্ড লেখার জন্য পেতে পারে। যদিও এর থেকেও কম দামে অনেকেই কাজ করে নিতে চায়, কিন্তু আপনার এগুলি avoid করা উচিত।

সেই সঙ্গে, 25 পয়সা word দামটি সব রকম আর্টিকেলের ক্ষেত্রে নয়। কিছু কিছু আর্টিকেল লেখার জন্য 30 থেকে 40 পয়সা নেওয়া সম্ভব। এটা নির্ভর করে কোন বিষয়ে আর্টিকেল লেখা হচ্ছে।

আর একজন অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সার, এক টাকা, দুই টাকা, তিন টাকা, এমনকি 4 টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে প্রতি word লেখার জন্যে নিয়ে থাকে।

এবং একটি কথা মনে রাখবেন, যদি বাইরের দেশের জন্য যদি গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল লেখেন, তাহলে আরো বেশি চার্জ করা সম্ভব।

কনটেন্ট রাইটিং কাজ কিভাবে পাবেন

বিভিন্নভাবে আপনি কাজ পেতে পারেন। এরমধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ পাবার সুযোগ গুলি আপনাদের বলবো।

  • ফেসবুক গ্রুপ থেকে
  • ফ্রিল্যান্সিং website থেকে
  • Job website থেকে

ফেসবুক গ্রুপ : ফেসবুকে content রাইটিং এবং ব্লগিং সম্বন্ধিত অনেক গ্রুপ আছে, এইসব গ্রুপে আপনি জয়েন হতে পারেন।

এরপর ওখানে আপনি কাজের জন্য পোস্ট করতে পারেন অথবা অন্যান্য ব্লগারের পোস্ট এর নীচে কমেন্ট করতে পারেন যে যে আপনি একজন কনটেন্ট রাইটার এবং কাজ করতে ইচ্ছুক।

এভাবে ফেসবুকের মাধ্যমে অনেকেই কাজ পেয়ে থাকে তাই আপনিও চেষ্টা করতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট থেকে: ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট থেকে আপনি সহজেই কাজ পেতে পারেন। এর জন্য আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলি তে গিয়ে নিজের কাজের gigs বানাতে হবে।

  • জানুন ফ্রিল্যান্সিং website গুলির নাম।

Job Website: জব ওয়েবসাইট গুলিতেও প্রচুর ফ্রিল্যান্সিং কনটেন্ট রাইটার জন্য কাজ দেওয়া থাকে চাইলে । আবেদন করতেও পারেন।

সাবধানতা:

অনেক সময় দেখা গেছে, অনলাইনের মাধ্যমে আমরা অনেক আর্টিকেল লেখার জন্য কাজ পেয়ে থাকি। কিন্তুু অনেক সময়ই কাজ করার পর টাকা পাওয়া যায় না।

এরকম অনেকের সাথে ঘটেছে, অনেকেই আছেন যারা একমাস কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ করেও, এক টাকাও পায়নি।

আর এরকম সমস্যা আপনার সঙ্গেও হতে পারে। যাতে না হয়, সেজন্যই আমি কিছু টিপস দিচ্ছি যা আপনি ব্যবহার করতে পারেন।

টিপস গুলি হলো :

যদি কোন ফেসবুকে অথবা অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম আপনাকে কনটেন্ট রাইটিং এর কাজ দেয়, তাহলে ওই কাজটি করার জন্য, ওনাকে আপনার ফ্রিল্যান্সিং সাইটের Gigs টি শেয়ার করবেন এবং উনাকে বলবেন, ঐখান থেকেই কাজের জন্য আপনাকে কাজটি যেনো দেন।

এতে উনাকে কাজের জন্য ফ্রিল্যান্সিং সাইটে টাকা দিতে হবে। যার ফলে, আপনি যখন উনাকে ওই সাইটের মাধ্যমে কাজটি করে দেবেন, তখন টাকা পেয়ে যাবেন।

এছাড়াও, যদি ফ্রিল্যান্সিং সাইট থেকে আপনাকে কাজের অনুমতি না দেয়, তাহলে আপনি একটি কাজ করে, ওই দিনই, ওই কাজটি ওনাকে দিয়ে, তখনি টাকা চেয়ে নিন। (এতে যদি আপনি টাকা না পান, তাহলে আপনি মাত্র একটি কাজ করেছেন। তাই বেশি সমস্যা হবে না।

একসঙ্গে বেশি কাজ করে তারপর টাকা চাইলে উনি যদি না দেন তাহলে আপনার অনেক পরিশ্রম বিথা যাবে। তাই ,প্রথমে যতটুকু কাজ করবেন ওই কাজের টাকা নিয়ে নেবেন

এছাড়া, অনেকেই আপনাকে ফ্রিতে প্রথম কনটেন্ট লিখে দেয়ার জন্য বলতে পারে।

সে ক্ষেত্রে, যদি আপনার পোস্টটি কোন বড়ো ওয়েবসাইটের জন্য লেখা হয় এবং যদি আপনার লেখার ক্রেডিট (credit) দেওয়া হয়। তাহলে ফ্রিতে করতে পারেন। কারণ বড়ো ওয়েবসাইট মানে অনেক ভিজিটর ভিজিট করে এবং আপনাকে ক্রেডিট দিলে আপনার পরিচিতি বাড়বে , এর ফলে পরবতীকালে কাজ পাওয়ার সম্ভবনা থাকে।

এছাড়া ওয়েবসাইট নতুন এবং খুবই ছোট ওয়েবসাইটের জন্য ফ্রী কন্তেন্ট লিখে কোনো লাভ নেই। এতে আপনার পরিশ্রম শুধু বৃথাই হবে।

উপসংহার

ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনেকেই কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ করে থাকেন এবং প্রচুর ইনকাম করা সম্ভব হয়।

এছাড়া একজন কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কোন কোম্পানিতে কাজ করলেও ভালো বেতন পাওয়া যায়।

আমার মতে, আপনি প্রথমে কোন একটি কোম্পানিতে কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ করলে, আপনার অভিজ্ঞতা অনেক বেড়ে যাবে, সেইসঙ্গে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে পরিচয় হবে। এরপর ধীরে ধীরে, ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন।

শেয়ার করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *