জলবায়ু কাকে বলে? – শ্রেণীবিভাগ, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ

একটি অঞ্চলের ৩০ বছরের বেশি সময়ের আবহাওয়া অর্থাৎ তাপমাত্রা, বাতাস, আর্দ্রতা, তুষার এবং বৃষ্টির গড় পরিমাপকে জলবায়ু বলা হয়। বাংলাদেশের জলবায়ু মোটামুটি উষ্ণ, আর্দ্র ও সমভাবাপন্ন।

যেখানে কয়েকদিন বা ঘণ্টার মধ্যে আবহাওয়ার পরিবর্তন হতে পারে, সেখানে জলবায়ু পরিবর্তন হতে কয়েক হাজার বছর লেগে যায়।

জলবায়ু বিভিন্ন কারণের দ্বারা নির্ধারিত হয়, যেগুলোকে জলবায়ুর নিয়ামক বলা হয়ে থাকে। যথা:

  • অক্ষাংশ
  • পর্বতের অবস্থান
  • সমুদ্র থেকে দূরত্ব
  • বায়ুপ্রবাহের দিক
  • বৃষ্টিপাত
  • বনভূমি
  • উচ্চতা
  • সমুদ্রস্রোত
  • ভূমির ঢাল
  • মাটির বিশেষত্ব

শ্রেণীবিভাগ

  • গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ু
    • নিরক্ষীয় জলবায়ু
    • মৌসুমী জলবায়ু
  • নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু
  • হীমমণ্ডলীয় জলবায়ু

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ

জলবায়ু পরিবর্তনের অনেক কারণ রয়েছে যা নিম্নরূপ-

প্রধান প্রাকৃতিক কারণগুলি হল:

১) আগ্নেয়গিরি –আগ্নেয়গিরি থেকে বিভিন্ন গ্যাস যেমন সালফার ডাই অক্সাইড, সালফার ট্রাইঅক্সাইড, ক্লোরিন, কার্বন ডাই অক্সাইড, হাইড্রোজেন অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড এবং জলীয় বাষ্প ইত্যাদি নির্গত হয়, যা বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়ে এবং এই গ্যাসগুলি জলবায়ুর উপর তাদের প্রভাব দীর্ঘকাল ধরে রাখে।

২) সমুদ্রের স্রোত –সময়ে সময়ে, মহাসাগর বায়ুমণ্ডলে তার তাপ ছেড়ে দেয় এবং বায়ুমণ্ডলকে প্রভাবিত করে, এই তাপ বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস প্রভাবকেও প্রভাবিত করে, তাই সমুদ্রের স্রোত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান কারণ হয়ে ওঠে।

মানবসৃষ্ট কারণগুলি হল:

৩) গ্রিন হাউজের প্রভাব – কার্বন ডাই অক্সাইডের ওঠানামার কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় তাকে গ্রীন হাউস প্রভাব বলে। কার্বন ডাই অক্সাইড ছাড়াও মিথেন, ক্লোরোফ্লুরোকার্বন, কার্বন সালফার ডাই অক্সাইড ইত্যাদির মতো অনেক গ্যাস রয়েছে যা গ্রিনহাউস প্রভাবকে প্রভাবিত করে জলবায়ু পরিবর্তন ঘটায়।

৪) কৃষি- আধুনিক কৃষিকাজে এই রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন ধরনের গ্যাস উৎপন্ন হয়, যেমন মিথেন ইত্যাদি।

৫) জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার – কার্বন ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডের মতো বিভিন্ন গ্যাসের আধিক্যের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা আরও খারাপ হয়েছে কারণ তাদের প্রভাবের কারণে গ্রিনহাউস প্রভাব যেমন বড়, তেমনি বায়ু এবং জল দূষণও বড়, জীবাশ্ম জ্বালানির কারণে অ্যাসিডিফিকেশন অর্থাৎ অ্যাসিড বৃষ্টির সমস্যাও বেড়েছে।

৬) নগরায়ন ও শিল্পায়ন – নগরায়ন ও শিল্পায়নের কারণে মানুষ পানি দূষণ, বায়ু দূষণ, মাটি দূষণ, শব্দ দূষণ ইত্যাদি সমস্যার জন্ম দিয়েছে। উন্নত দেশ থেকে শুরু করে বিশ্বের সব দেশই জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নানা সমস্যার সঙ্গে জড়িত।

শেয়ার করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *